ছুটে চলি

Picture Credit: Nuran Durdany

চোখ দু’টো কে খুলতে ইচ্ছে করছে না। বার বার খুলেও বন্ধ করে দিচ্ছি। কিন্তু এভাবে কতক্ষন? এই ভেবে উঠে বসলাম। অনিচ্ছার স্বত্বেও ঠান্ডা পানিতে মুখ ভিজিয়ে ঘড়ির কাটার দিকে তাকিয়ে সব ভাবনা আর অলসতা কে দূরে সরিয়ে রাত পোশাক ছাড়িয়ে দ্রুত বেরিয়ে পরা প্রতিদিনের যাত্রায়। পথ চলতে কাউকে যেমন পাশ কাটিয়ে চলে যেতে হয় তেমনি ছুটে চলতেই চড়ুই পাখির দৌড়াদৌড়িও চোখ এড়িয়ে যায় না। দিনের সময়টা কমতে থাকে। হাত ঘড়ির দিকে তাকিয়ে আরো দ্রুত ছুটে চলা। কারন দেরী হলে আজকের দিনের মতো হয়তো নতুন অনেক কিছু কে হারিয়ে ফেলাবো!

আকাশে এখন সূর্য উঠেছে। পিছনে ফিরে তাকাতেই দেখি, ঘোর অন্ধকার এখনো কাটেনি। দ্রুত হাঁটছি আসলে হাঁটছি না রীতিমত একটা রেসের মধ্যে দৌড়াচ্ছি। তবে ভাবনারা এবার নিজেকে সামলে নিয়ে নিজের অধিকারটা সবার আগে তুলে ধরার। আর খুব বেশি সময় নেই, কিছুক্ষনের মধ্যেই আমাকে যেতে হবে ঐ দরোজায়। তা না হলে আজকের জন্য বন্ধ হয়ে যাবে সব হাসি আর আনন্দ। পা ধরে আসছে, কষ্ট হচ্ছে ভীষণ কিন্তু ঐ যে আমার আনন্দ অপেক্ষা করছে আরও জোরে ছুটে যেতে হবে অথচ পারছি না আর। ভেঙ্গে পড়ছি, পা’ ধরে আসছে, একটু পর হয়তো পড়েই যাবো। ঠিক যেমনি প্রতি রাতে চোখ বন্ধ করলে মনে হয় উপর থেকে পড়ে যাচ্ছি! না না না আমাকে আজকেও পারতে হবে তা না হলে সবার থেকে আলাদা হয়ে যাবো, পিছিয়ে যাবো! আমি পারবো ওখানটায় পৌঁছাতে...


সবটুকু প্রচেষ্টা দিয়ে হাঁটছি...  ঠিক যখন দরোজার সীমানায় এসে দাঁড়ালাম তখন পিছনে ফিরে তাকিয়ে দেখি কালো অন্ধকার মুছকি হাসছে। চোখ দু'টো কে বন্ধ করে যখন সামনে তাকাই তখন দেখি কুয়াশার ভেতর ঘোর আনন্দ আর হাসির শব্দ। বুঝতে পারি ঠিক সময়ে এসে পৌঁছেছি। এই রেসটা শুধু সবার মাঝে নিজেকে আত্মপ্রকাশ তাই নয়, নিজেকে প্রকাশ্যে মুক্ত করার পালা। আজও আমি পৌঁছে গেছি আনন্দ দুয়ারে। মাথার উপর প্রতাপসূর্য হাসছে... আমারও হাসতে ইচ্ছে হলো কিন্তু সময় নেই হাতে। পরবর্তী রেসটাতেও এবার যেতে হবে। হাসিটা তুলে রাখলাম অন্য কোন দিনের জন্য। জানি না সেই দিনটার খোঁজ আদৌ দেখবো, শুধু জানি এখানে যোগ্যতা অর্জনের সিঁড়িটা খুঁজতেই ছুটে চলছি....  



মন্তব্যসমূহ

জনপ্রিয় পোস্টসমূহ