অচল স্টেশন

Picture Credit: Nuran Durdany

জীবনটা বড় বিচিত্র। মাঝে মাঝে স্বপ্নের মধ্যেও হতাশা খেলা করে, আর খেলা করে ধুলোমাখা পথ। আজকাল হাঁটতে হাঁটতে ধুলোর খেলা দেখতে বেশ লাগে। সেই ধুলোদের সাথী হয় ঝরে পড়া দু’একটি পাতা। চারপাশের মানুষ গুলোর অবস্থা অন্য রকম বলেই হয়তো... নাহ, কিছু নাহ!

প্লাটফর্মে বসে আছি, মানুষ দেখি। আমি প্রায়ই একজনকে খুব খেয়াল করতাম। টের পেলাম, কেউ তাকে বুঝতে চায়নি। আসলে সেই মানুষটা নিজেকে প্রকাশ করেনি। একজন মানুষ চারপাশে গুটিয়ে থাকলে, কথা বলতে কেউ যদি এগিয়ে না আসে, তাহলে আশেপাশের সবাই অহেতুক ভুল ভাবনা ভেবে বসে থাকে। আর আমাদের সংসার জগতের আপন মানুষগুলো যখন সুখী না হয়, তখন কেউ কেউ নিজের ভেতর দুঃখ অনুভব করে লুকিয়ে রাখে নিজেকে। বারবার এককথা বলতে গিয়ে বোধ হয় অন্যকথা বলে ফেলছি। আসলে আজকাল আমি ছন্দ হারিয়ে ফেলছি, মাঝে মাঝে ভয় হয় জীবনের ছন্দ হারিয়ে ফেলছি না তো!

ঐ মানুষটার কথা বলি যে মানুষটা আজ চোখের জলকে ধরে রাখতে পারেনি। যে মানুষটি জেনে গেছে তার সবচেয়ে আপন মানুষটিকে সে সময়ের গণনায় একদিন হারিয়ে ফেলবে। আর সেই কারনেই চুপ করে থেকে যাওয়া, নিজেকে গুটিয়ে ফেলা। মাঝে মধ্যে কেউ কিছু বললে উওর দিয়ে বসা; আমার লাইফটা বোরিং লাইফ!

আজকে যখন আমি তার হাতটা ধরলাম, জানতে চাইলাম কেমন আছো তুমি? তারপর গরগর করে বলতে লাগল তার জীবনের কথা। একসময় বলে বসলো; মা মনে হয় আর বেশি দিন বাঁচবে না। অনেক কঠিন রোগ হয়েছে ব্রেন টিউমার। দিন দিন খুব অসুস্থ হয়ে পড়ছে। আমার হাত ধরে হাউ-মাউ করে কেঁদে ফেললো, সান্ত্বনা। আমি কথাটা শোনার পর সান্ত্বনা নামের মেয়েটা কে, কি সান্ত্বনা দিবো? মেয়েটা কাঁদছে, আর নিজেকে সামলে নেবার প্রবল চেষ্টা।

আমি মাঝে মধ্যে নিজেই যখন চুপ করে থাকি, তখন এই পৃথিবীর কোন শব্দই মনের কোন কোণেই পৌঁছায় না। এতো শব্দের ভীড়ে আমার মন, কোন কিছুকে সাড়া দিতে পারে না। মন শুধু থেমে থাকে একটা অচল স্টেশনে, সময়টা... ওটা চলে যায়....  কিন্তু আমি থেমে দাঁড়িয়ে রই।

দীর্ঘনিঃশ্বাস... শব্দের ভার...
আমাকেও ফিরতে হয়, আর ফেরার গল্প সেই চির-চেনা যান্ত্রিক জীবনের আয়োজনে।



মন্তব্যসমূহ

জনপ্রিয় পোস্টসমূহ