''সবুজ স্মৃতি''

Picture Credit: Nuran Durdany

বাস থেকে নেমে রিক্সা নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছি। চারপাশে সবুজ। মুহুমুহু সবুজের ঘ্রাণ ভেসে আসলো। চারপাশের মানুষগুলো কত সহজ-সরল। ছোট ছোট বাচ্চারা স্কুলে যাচ্ছে। তারা তাকিয়ে আছে মুখের দিকে, হা করে। এই দৃশ্য দেখলেই মন ভালো হয়ে যায়, আর তখন মনে মনে হাসি। অনেক সময় রিক্সা চালক পিছনে ফিরে তাকিয়ে দাঁত বের করে একটা সরল হাসির রেখা টেনে দেয়, বুঝতে পারি উনিও খুশি হয়েছেন তার রিক্সায় নিতে পেরে। একপাশে ধানখেত আরেকপাশে পুকুর, সরু পথ দিয়ে যাচ্ছি। আবার কোথাও শুধু খালিমাঠ, মাঝে মাঝে চোখে পড়ে চায়ের দোকান বা ছোট ছোট বাজার। এভাবেই দেখতে দেখতে এক সময় পৌঁছাই গন্তব্যে। রিক্সা যখন বাড়ীতে প্রবেশ করতে থাকে তখনই দেখা যায় বাড়ীর রাস্তার সামনে সব ছোট ছোট বাচ্চারা দাঁড়িয়ে আছে, অনেকে রিক্সার পিছনে উঠে দাঁড়িয়ে পড়ে। কি আনন্দ তাদের! আর শহরের মানুষের আগমন বাড়ির অন্দরে এত দ্রুত পৌঁছায় যে, পুকুর ঘাটে এসে সব মুরুব্বি আর বড়রা দাঁড়িয়ে থাকেন এক নজর দেখার জন্য, খোঁজ-খবর নেওয়ার জন্য। সেই সাথে ঠিক মতো এসে পৌছালাম কিনা। এই দৃশ্য গুলো আসলেই অন্য রকম। গ্রামে গেলে সবাই কেমন জানি ব্যস্ত হয়ে পড়ে কি করবে-না করবে ভেবে পায় না। কি খাওয়াবে না খাওয়াবে পুরো অস্থির হয়ে যায়। এই পিঠা ঐ পিঠা আর ডাবের পানি, সবকিছু এক সাথে এনে সামনে হাজির করে। তখন মানুষ গুলোর মুখের দিকে তাকালে মন টা অদ্ভূত ভালো লাগা কাজ করে। বেশি মজা লাগে ছোট বাচ্চাদের দেখে, একদম মুখের দিকে কি ভাবে জানি তাকিয়ে থাকে আবার লজ্জাও তারা পায়। ছোটরাও ব্যস্ত হয়ে যায়, কি করবে না করবে ভেবে। কার আগে কে কি কাছে এনে দিবে, আর বাচ্চাদের হাতে যদি চিপস চকোলেট ধরিয়ে দেওয়া যায়। তখন তাদের ভাবগুলো হয়ে যায় অন্যরকম। একজন আরেক জন কে বলতে থাকে দেখেছিস আমাকে ঢাকা থেকে এটা এনে দিয়েছে। তখন আমার যেটা অনুভব হয় কেউ যদি দেশের বাইরে থেকে কিছু এনে দিলে যেমন আনন্দ হয়। ঠিক তেমনি গ্রামের ছোট বাচ্চাদের কাছে ঢাকা থেকে কিছু এনে দিলে সেটাও নেহাত কম আনন্দের কিছু নয়।



মন্তব্যসমূহ

জনপ্রিয় পোস্টসমূহ