অসমাপ্ত গল্প

Picture Credit: Nuran Durdany

আমার অসমাপ্ত গল্পকে কেউ সমাপ্ত করবে তা ভাবতেই অবাক শব্দহীন কল্পে আমি চুপসে যাই। গল্পলেখা শুরু কোন এক শ্রাবণে। সেইদিন মন খারাপের পাহাড়ে বসে আকাশে ছেয়েছিলো ধূসরমেঘ, ঝিরিঝিরি বৃষ্টির মাঝে সবুজ-খয়েরি পাতার টুপটাপ ঝরে পড়ার দৃশ্য মনমাঝিকে আত্মশুদ্ধির মিশ্র হাওয়ারা ভাসিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলো বহুদূরে। অনেকটা সময় পেরিয়ে যাওয়ার পর বৃষ্টি শেষে রংধনুর দেখা পাই, তখন মুগ্ধ বিস্ময়ে আকাশের দিকে তাকিয়ে বাতাবিলেবুর বাগানে শুয়ে থাকি চুপচাপ।

শৈশবে নীল-সাদা কাগজে নৌকা বানিয়ে হলদে গামলার জল নেড়ে স্রোতে ভাসিয়ে দিতাম ওদের । আর দেখতাম সেই স্রোতে নৌকাগুলো চলে যাচ্ছে গঙ্গা নদীর জলে। ইস যদি নৌক হতে পারতাম। যে রাতে আমার দুঃস্বপ্নরা উঁকি দিতো, ভয়ে দমবন্ধ হয়ে যেতো।  লুকিয়ে রাখা লালখামের চিঠিগুলোকে তখনই পাঠিয়ে দিতাম ধ্রুব তারার কাছে। অতঃপর রাতের অন্ধকারেই বাতাবিলেবু বাগানে গিয়ে সুর করে গান গাইতাম উত্তরের অপেক্ষায়। সেই গান শুনে বিস্তৃত বাগনের সবুজাভ আলোয় জোনাকীরা বেরিয়ে আসতো আর এপ্রান্ত থেকে ওপ্রান্তে আমি হেঁটে বেড়াতাম । এভাবে কত রাত যে হেঁটে চলেছি লালচিঠির উত্তরের। ভেবে যাই পেন্ডুলামের দোলনায় অসমাপ্ত গল্প...

হ্যাঁ, একদিন সেই উত্তরের দেখা মিললো। সেইদিনটা অদ্ভুত! আমাকে রেখেই বাতাবীলেবু বাগানের জোনাকিরা ঘুমিয়ে পড়লো, আর ঘুঙুর পায়ের-ক্লান্তিরা ঘুমহীন আমাতে পেখম মেলে খেলে যাচ্ছিলো। আমি শুয়ে শুয়ে ভাবছিলাম আদৌ কি সেখানে কেউ আছে? শুধু আমারই জন্যে! আমার গল্পগুলোর পরিপূর্ণতা এনে দিতে!

ভাবনার দোলায় আকাশে তাকিয়ে দেখলাম অসমাপ্ত চিহ্নের এক প্রগাঢ় ছায়া।ভোরের সুখতারা আমার চিঠির ফের উত্তর নিয়ে আসছে। সেই গোপন উত্তর কানের কাছে ফিসফিস করে সুর হাওয়ায় মিলিয়ে যেতেই রাজ্যের ঘুম ভর চোখ জুড়ে করলো। স্বপ্নসুরে নক্ষত্রপুঞ্জ পাঠিয়ে দিলো এক ঝুড়ি রঙ্গিনফুল। ঘুম ঘোরে অনুভব করলাম এক অদ্ভুত শিহরণ, একটা গাঢ় ছায়া কপাল ছুঁয়ে দিচ্ছে...



মন্তব্যসমূহ

জনপ্রিয় পোস্টসমূহ